


✨"তুমি সৌন্দর্যের বাদশাহ, তুমি হৃদয়ের জান ﷺ"
তুমি সৌন্দর্যের বাদশাহ, তুমি হৃদয়ের জান ﷺ,
তোমার মুখ মোবারক — কুরআনের ব্যাখ্যার মহান নিদর্শন।
না কখনো হয়েছিল, না কখনো হবে,
তোমার মতো কেউ — তুলনার অতীত, উত্তরের বাহিরে।
তুমি যে শুরু, তুমি যে শেষ —
চিরন্তন সৌন্দর্য পেয়েছো তুমি নিঃশেষ।
হাজার বছরের সে পবিত্র বয়স,
তবু যৌবনের দীপ্তি ঝরে তোমার অনন্ত রূপে।
রাখা হয়েছে তোমার উপর —
সত্তর হাজার পর্দা আল্লাহর গৌরবের ছায়ায়।
পৃথিবীর সব সূরা হার মানে,
যদি তোমার একটিমাত্র পর্দাও ওঠে দুনিয়ার মায়ায়।
মেশক ও আম্বর, জান্নাতের সুগন্ধ —
তারাও বৃথা তোমার ঘামের তুলনায়।
যার কাছে পৌঁছেছে, যিনি পেয়েছেন,
তোমার ঘামের সৌরভ — গোলাপকেও করেছে লজ্জায়।
তোমার রূপ ও বর্ণনার কোরবানি আমি,
তোমার মধুর ভাষারও কোরবানি আমি।
সুগন্ধের মতো নেমে এসেছো হৃদয়ে,
কী অপূর্ব সে তোমার নাম, তোমার উপাধি।
তোমার প্রশংসাগানে যিনি ব্যস্ত,
সেই সাঈমও এক বিস্ময় মানব।
যিনি কাঁপে কিয়ামতের ভয়েতে,
তুমি যার কথা বলো — তিনিই তো বিচারক, নবি ﷺ!
তুমি সৌন্দর্যের বাদশাহ, তুমি হৃদয়ের জান ﷺ,
তোমার মুখ মোবারক — কুরআনের ব্যাখ্যার মহান নিদর্শন।
“তুমি সৌন্দর্যের বাদশাহ, তুমি হৃদয়ের জান ﷺ”
📖 ব্যাখ্যাসহ বিস্তারিত সারাংশ:
এই গজলটি শুধু কাব্যিক গীতিকবিতা নয়, বরং এটি নবী মুহাম্মদ ﷺ-এর প্রতি একজন প্রেমিক উম্মতের হৃদয়ছোঁয়া নিবেদন। এখানে তাঁর সৌন্দর্য, চরিত্র, ও নবুয়তের মর্যাদা তুলে ধরা হয়েছে আল্লাহর কুরআনী ভাষা ও হাদীসের আলোকে।
🕋 ১. নবীজির ﷺ সৌন্দর্য ও মুখ মোবারক:
“تُو شاہِ خوباں تُو جانِ جاناں”
অর্থ: “তুমি সৌন্দর্যের বাদশাহ, তুমি হৃদয়ের জান!”
এটি নবীজির ﷺ অতুলনীয় সৌন্দর্য ও মানুষের অন্তরের গভীর প্রেমের প্রকাশ। নবীজির চেহারা মোবারক এমন সুন্দর ছিল যে সাহাবায়ে কেরাম বলতেন:
“আমি চাঁদের দিকে তাকিয়েছি, আর তারপর রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর দিকে তাকিয়েছি, আমি চাঁদের চাইতে তাঁর চেহারা মোবারককে অধিক উজ্জ্বল ও সুন্দর পেয়েছি।”
— (তিরমিযি, হাদীস: ২৮১১)
📘 ২. নবুয়তের শ্রেষ্ঠত্ব ও অনন্যতা:
“না হয়েছে, না হবে — তোমার মতো কেউ।”
আল্লাহ বলেন:
قُلْ إِن كُنتُمْ تُحِبُّونَ ٱللَّهَ فَٱتَّبِعُونِى يُحْبِبْكُمُ ٱللَّهُ
“বল, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাস, তবে আমার অনুসরণ করো, আল্লাহও তোমাদের ভালোবাসবেন।”
— (সূরা আলে ইমরান ৩:৩১)
এ আয়াত নবীজি ﷺ-এর অনুসরণের মাধ্যমেই আল্লাহর ভালোবাসা অর্জনের একমাত্র পথ প্রমাণ করে।
🕊️ ৩. নবীজি ﷺ চির যৌবন ও রূহানী সৌন্দর্যের প্রতীক:
“হাজার বছরের বয়স হলেও শাশ্বত তার যৌবন।”
নবীজির সৌন্দর্য শুধু বাহ্যিক নয়, বরং তাঁর রূহানিয়াত এত গভীর যে, সময়ের সঙ্গে বিবর্ণ হয়নি, বরং চির নবীন। তিনি ছিলেন সর্বশেষ নবী — যাঁর নবুয়ত কিয়ামত পর্যন্ত প্রযোজ্য।
مَّا كَانَ مُحَمَّدٌ أَبَآ أَحَدٍۢ مِّن رِّجَالِكُمْ وَلَـٰكِن رَّسُولَ ٱللَّهِ وَخَاتَمَ ٱلنَّبِيِّـۧنَ
“মুহাম্মদ তোমাদের মধ্যে কারো পিতা নন, বরং তিনি আল্লাহর রাসূল ও শেষ নবী।”
— (সূরা আহযাব ৩৩:৪০)
🌌 ৪. নবীজির ﷺ রূপ ও নূরের পর্দা:
“তোমার উপর আছে সত্তর হাজার নূরের পর্দা।”
হাদীসে এসেছে:
“আল্লাহর নূরের সত্তর হাজার পর্দা আছে, যদি একটি পর্দাও খুলে দিতেন, তবে সমস্ত সৃষ্টি জ্বলে যেতেন আল্লাহর নূরের তেজে।”
— (মুসলিম)
নবীজি ﷺ-এর রূহানী মর্যাদা এত উচ্চ যে তা একাধারে নূরের শিখরে। এক পলক দৃষ্টিতেই সাহাবীরা অশ্রুপাত করতেন।
🌺 ৫. ঘামের ঘ্রাণ, জান্নাতের গন্ধের চেয়েও শ্রেষ্ঠ:
“তোমার ঘামের সুগন্ধ গোলাপকে লজ্জা দেয়।”
উম্মে সুলাইম (রা.) বলেন:
“আমি নবীজি ﷺ ঘুমালে তাঁর ঘাম মোবারক সংগ্রহ করতাম। সেটা ছিল অতি সুগন্ধি — যেন জান্নাতের মিশক!”
— (সহীহ মুসলিম)
📖 ৬. নবীজি ﷺ-এর ভাষা, উপাধি ও দয়ালু আচরণ:
“তোমার মিষ্টি ভাষা, প্রেমময় আচরণ, নামেই আছে প্রশান্তি।”
আল্লাহ বলেন:
لَقَدْ جَآءَكُمْ رَسُولٌۭ مِّنْ أَنفُسِكُمْ عَزِيزٌ عَلَيْهِ مَا عَنِتُّمْ حَرِيصٌ عَلَيْكُم بِٱلْمُؤْمِنِينَ رَءُوفٌۭ رَّحِيمٌۭ
“তোমাদের মধ্য থেকেই তোমাদের নিকট একজন রাসূল এসেছেন; তোমাদের দুঃখ-কষ্ট তাঁর নিকট অত্যন্ত কষ্টদায়ক। তিনি তোমাদের মঙ্গলের জন্য আগ্রহী, আর মুমিনদের জন্য তিনি দয়ালু ও করুণাময়।”
— (সূরা তাওবা ৯:১২৮)
🔥 ৭. কিয়ামতের দিনে তাঁর সুপারিশ ও মর্যাদা:
“যার ভয়ে সবাই কাঁপবে, তিনি হবেন বিচারকের আসনে।”
হাদীসে এসেছে:
“কিয়ামতের দিন সবাই বলবে, ‘নাফসি নাফসি’। তখন আমি বলব, ‘আমার উম্মত! আমার উম্মত!’”
— (সহীহ বুখারী)